ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতার তুলনা বেশ জটিল। গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের ২০২৫ সালের সূচক অনুসারে এই দুই দেশের সামরিক শক্তির একটি চিত্র তুলে ধরেছে ‘ডিফেন্স সিকিউরিটি এশিয়া’ তা প্রকাশ করেছে।
জিএফপি ২০২৫ অনুযায়ী, ১৪৫টি দেশের মধ্যে ভারত সামরিক শক্তিতে বিশ্বে চতুর্থ, পাকিস্তানের অবস্থান ১২তম।
ভারতের এই অবস্থান তার বিশাল জনসংখ্যা, বড় প্রতিরক্ষা বাজেট ও বিস্তৃত সামরিক সরঞ্জামের কারণে।
অন্যদিকে পাকিস্তান ছোট অর্থনীতি সত্ত্বেও কৌশলগত দিকে মনোযোগী।
সৈনিক সংখ্যা:
ভারতের সক্রিয় সেনা ১৪ লাখ ৬০ হাজার (বিশ্বে দ্বিতীয়)। মোট সামরিক জনবল প্রায় ৫১ লাখ।
পাকিস্তানের সক্রিয় সেনা ৬ লাখ ৫৪ হাজার (বিশ্বে সপ্তম)। মোট সামরিক শক্তি প্রায় ১৭ লাখ।
জনবলে ভারত উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে।
প্রতিরক্ষা বাজেট:
ভারতের বাজেট প্রায় ৭ হাজার ৯০০ কোটি ডলার (বিশ্বে তৃতীয়)। এটি পাকিস্তানের বাজেটের চেয়ে ৬ থেকে ৮ গুণ বেশি।
পাকিস্তানের বাজেট ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ কোটি ডলার। তবে অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা থাকলেও চীনের সহায়তা পায় দেশটি।
স্থলবাহিনী:
ট্যাংক, সাঁজোয়া যান ও কামানের সংখ্যায় ভারত এগিয়ে। ভারতের ট্যাংক ৪,৬১৪টি, পাকিস্তানের ৩,৭৪২টি।
তবে পাকিস্তানের ট্যাংক বহরও বেশ আধুনিক ও প্রতিযোগিতামূলক।
বিমানবাহিনী:
ভারতের মোট বিমান ২,২২৯টি, যুদ্ধবিমান প্রায় ৬০৬টি। পাকিস্তানের মোট বিমান প্রায় ১,৪০০টি, যুদ্ধবিমান প্রায় ৩৮৭টি।
ভারতের বিমানবহর বড় হলেও পাকিস্তানের বিমানবাহিনী আধুনিকায়ন হচ্ছে এবং তাদের নজরদারি বিমান ভারতের চেয়ে বেশি।
নৌবাহিনী:
ভারতীয় নৌবাহিনী আকারে অনেক বড় এবং গভীর সমুদ্রে অভিযান চালাতে সক্ষম। তাদের দুটি বিমানবাহী রণতরি ও পারমাণবিক সাবমেরিন রয়েছে।
পাকিস্তানের নৌবাহিনী ছোট এবং মূলত উপকূল প্রতিরক্ষায় নিয়োজিত। তাদের বিমানবাহী রণতরি নেই।
পারমাণবিক সক্ষমতা:
পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যায় পাকিস্তান কিছুটা এগিয়ে। দেশটির আনুমানিক ১৪০-১৫০টি অস্ত্র রয়েছে। ভারতের রয়েছে ১৩০-১৪০টি।
গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য হলো নীতিতে। ভারত ‘আগে ব্যবহার না করার’ (নো ফার্স্ট ইউজ) নীতিতে বিশ্বাসী। কিন্তু পাকিস্তান প্রয়োজনে আগে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে বিশ্বাসী (‘ফুল-স্পেকট্রাম ডেটারেন্স’)।
কৌশলগত দিক:
ভারতের কৌশলগত মিত্রদের মধ্যে রাশিয়া, ফ্রান্স ও ইসরায়েল রয়েছে। পাকিস্তানের প্রধান মিত্র চীন।
সামগ্রিকভাবে, প্রচলিত সামরিক শক্তিতে ভারত এগিয়ে। কিন্তু পাকিস্তানের পারমাণবিক সক্ষমতা, কৌশলগত নীতি ও চীনের সমর্থন দেশটিকে শক্তিশালী অবস্থানে রেখেছে। সাম্প্রতিক উত্তেজনা এই সামরিক ভারসাম্যকে আবার আলোচনার কেন্দ্রে এনেছে।


